দূর্নীতিসারাদেশ

প্রতারক শাহেদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী এখলাছ খাঁনের ঢাকায় মামলা দায়ের।


ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকে এখলাছ খাঁনের বিরুদ্ধে গত ক’দিনে বিভিন্ন পত্রিকায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ,রিক্সা’র ড্রাইভার থেকে শত কোটি টাকার মালিক এবং প্রতারক শাহেদের বন্ধুসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়।তার দেশের বাড়ি থেকে
যখন রাগ করে চলে আসেন ছাতকে মুক্তিরগাঁও এলাকায় জমির উদ্দিনের গ্যারেজে স্থান পেয়েছেন।কিছুদিন যাবার পর এলাকার প্রতিটি মানুষের ভালোবাসায় তিনি নিজ এলাকায় চলে না গিয়ে দেশের বাড়ি থেকে ব্যবসা করার জন্য পুঁজি নিয়ে চলে আসেন ছাতকে এবং এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।প্রথমে তার ব্যবসা
ছিল ৪০ টি রিক্সা,এরপর শাহপরান ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ, রিফাত ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ, শাহপরান সেনেটারী,শাহপরান ট্রেইলার্স,সাদিয়া
নৌ

পরিবহন দুটি, রিফাত থাই অ্যালুমিনিয়াম, রিফাত স্টোন ক্রাসার নামের প্রতিষ্ঠান
পরিচালনার পাশাপাশি বালু ও পাথরের ব্যবসা শুরু করেন।প্রায় ৩০ বছর ধরে ব্যবসা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।তার বিরুদ্ধে একটি মহল অপপ্রচারে নেমে পড়েছে।সে নিয়মিত ট্র্যাক্স ও ভ্যাট দিয়ে
সততা ও নিষ্ঠার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন বলে দাবি করেন।

মহামারির মধ্যে চিকিৎসার নামে প্রতারণা এবং জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম।রিজেন্ট কাণ্ডের পর তার এমন নানা অপকর্ম বেরিয়ে আসছে।দেশ
তোলপাড় করা প্রতারক সাহেদ করিম ও তাঁর সঙ্গী মাসুদ পারভেজ সুনামগঞ্জের এক বালু-পাথর ব্যবাসায়ীর কাছ থেকে ও প্রতারণা করে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।পাওনা টাকা চাইতে ঢাকায় গেলে ওই ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় দেখান সাহেদ।প্রতারণার শিকার সুনামগঞ্জের ছাতকে বালু-পাথর ব্যবসায়ী এখলাছ খান গত রোববার এ ব্যাপারে মামলা করার জন্য ছাতক থানায় যোগাযোগ করেন। ছাতক থানার ওসি (তদন্ত) মঈন উদ্দিন আহমদ জানান, ব্যবসায়ী এখলাছের লিখিত অভিযোগে ভুল থাকায় সংশোধন করে আনার জন্য বলা হয়েছে।ছাতক শহরের মণ্ডলীভোগ এলাকার ব্যবসায়ী এখলাছ খান জানান,গত মে মাসে শাহেদ ও তাঁর এক সহযোগী মাসুদ বালু-পাথর সরবরাহের কথা বলে দুই কোটি টাকার মালামাল নেন।সাহেদ করিম একই বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁর কাছ থেকে এক
কোটি ৪৯ লাখ ২৫ হাজার ৪২ টাকার বালু-পাথর নেন।এরপর তাঁকে তিনি ৩০ লাখ টাকার চেক এবং এক্সকাভেটর মেশিন বিদেশ থেকে আনার জন্য আরো এক লাখ ১০ হাজার ডলারের(প্রায় ৯৪ লাখ টাকার)এলসির কাগজ পত্র প্রদান করেন।সাহেদ কর্তৃক প্রদত্ত চেক এখলাছ খান ছাতকে এসে ব্যাংকে জমা দেয়ার পর জানতে
পারেন ওই হিসাবে কোনো টাকাই নেই।কয়েকবার ব্যাংকে যোগাযোগ করেও হিসাবে কোন টাকা পায়নি।এক্সকাভেটর মেশিন কেনার জন্য যে কোম্পানীকে সাহেদ করিম এলসি দিয়েছিলেন, ঐ কোম্পানীর সঙ্গে এখলাছ খাঁন যোগাযোগ করে জানতে পারেন এলসি ফেরৎ নিয়ে ক্যাশ করে ফেলেছেন সাহেদ করিম।এরপর অনেকবার ফোনে চেষ্টা করেও সাহেদ করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি এখলাছ খাঁন।

সর্বশেষ গত ৩০ জুন সাহেদের উত্তরার অফিসে (২/এ, সেক্টর-১২’এর ১৪ নম্বর সড়কের অফিসে) গিয়ে যোগাযোগ করলে তিনি পিস্তল মাথায় ঠেকিয়ে শাসিয়ে দেন,আর যেন কোন দিন তাকে (এখলাছ খানকে) ঢাকায় দেখা না যায়।এখলাছ খাঁন আরও জানান,অনেক চেষ্টা করে সাহেদের অফিসের এক স্টাফের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন,সাহেদ ৩০ জুন উত্তরার অফিসে আসবে। ২৯ জুন তিনি ঢাকায় চলে যান।৩০ জুন সকালে সাহেদের অফিসের সামনে গিয়ে বসে থাকেন তিনি।সকাল ১০ টায় সাহেদ অফিসের সামনে এসে নামে। তার সামনে গিয়ে বলেন ‘আপনি কী ঠিক করলেন ভাই,আমাকে চেক দিলেন অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। তাকে বিদেশ থেকে এক্সকাভেটর আনিয়ে দেবেন,কোম্পানীকে এলসি দিয়ে আবার ফেরৎ এনে ক্যাশ করে নিয়েছেন।এটা কী করলেন।এই কথা শেষ করতে পারিনি,তার কপালে পিস্তল থাক করে তিনি বলেন,গুলি করে তোর লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেব। আর যদি ঢাকায় আসিস তোর শরীরে গুলি করার জায়গাও থাকবে না। তার সঙ্গে ৪-৫ জন ছিল, সকলের কাছেই অস্ত্র ছিল।পরে তার অফিস থেকে বের হয়ে আসেন।একইভাবে মাসুদ পারভেজ বালু-পাথর নিয়ে একবার ১৮ লাখ টাকা দেয়। এখনো ৪০ লাখ ৫২ হাজার ২৩৫ টাকা তার কাছে পাওনা আছে। ফোন করলে আজ দেব, কাল দেব বলতে থাকে।এখন সে ও জেলে আছে।

ছাতক থানার ওসি (তদন্ত) মইন উদ্দিন আহমদ জানান, এখলাছ খাঁন সকালে সাহেদ ও মাসুদ পারভেজের প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন।সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় এখলাছ খানঁ বাদী হয়ে প্রতারক মোহাম্মদ সাহেদ বিরুদ্ধে ২০ জুলাই বিকালে মামলা দায়ের করেন।
(মামলা নং ২২)-৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারা মামলা রুজু করেন।

এ ব্যাপারে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ তপন চন্দ্র সাহা পিপিএম (বার)এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তদন্তপুবক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!