
শতাধিক স্কুল বন্ধ রেখেই জেলা শিক্ষা কর্মকতা ও সহকারি শিক্ষকরা আনন্দ ভ্রমণে!
শতাধিক স্কুল বন্ধ রেখেই জেলা শিক্ষা কর্মকতা ও সহকারি শিক্ষকরা আনন্দ ভ্রমণে!
সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে ছাতক উপজেলার শতাধিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখেই শিক্ষা সফরের নামে আনন্দ ভ্রমণে গেছেন।এ ঘটনায় জেলাজুড়েই চলছে ব্যাপক তোলপাড় শিক্ষা বিভাগে। এসব গুলোতে পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষা সফরে সহকারি শিক্ষকরা। তারা নিজ নিজ বিদ্যালয় থেকে ছুটি না নিয়ে সহকারি শিক্ষকদের শিক্ষা সফরে যাওয়ার ঘটনায় বিভাগজুড়েই নানা প্রশ্ন ও অভিভাবক ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জেলা শিক্ষা কর্মকতার নেতৃত্বে এক শ্রেনীর দুনীতিবাজ সহকারি শিক্ষকরাকে নিয়ে সিলেটের জফলং ভ্রমণ করছেন। এ কারণে সোমবার শিক্ষার্থীরা এসব বিদ্যালয়ে ক্লাস হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।



গত ২০ ফেরুয়ারি সোমবার সকালে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সমিতি ছাতক শাখার ব্যানারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা এস এম আব্দুর রহমানকে প্রধান অতিথি দিয়ে গাড়ির সামনে বিশাল ব্যানার টাঙ্গিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটের জাফলং এলাকায় শিক্ষা সফরের বের হয়েছেন তারা।
জানা যায়,এসব বিদ্যালয় গুলো হচ্ছে,তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রনব দাস মিটু, বন্যা তালুকদার,বৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুলন কুমার,সহকারী শিক্ষক রীতা আচার্য, ২৮ নং রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু সালেহ নোমান,সপ্না বেগম,ফাতেমা বেগম,মারজানা বেগম, একতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাঃ ফয়েজ আহমদ,স্বপন দাস,সুমন সুত্রধর,শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্ত, শহিদুল ইসলাম, রুমা দত্ত,নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভংকিম আর্চার্য, ভূইগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিসবাহ উদ্দিন, হারান দাস,শাখাইতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজ উদ্দিন, রুপন আচার্য, খাগহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, খিদুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুনা তালুকদার, মুল্লাআতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু তাহের, শেলী রাণি,যুগলনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছমির উদ্দীন, খাসগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনুর মোঃ আজিজ,খালিদুর রহমান, কামারগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু তাহের মোঃ মাসুম বিল্লাহ, লোকমান হোসেন,বেরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বসু মালাকার, রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পল্টু তালুকদার, চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল লতিফ,শরিষাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বাবুল মিয়া, বড় পলিরগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বারিন্দ্র দেবনাথ, হায়দরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল গফ্ফার, কুর্শি পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কয়েছ আহমদ, মইনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আতিক উল্লাহ, পুরান সিংচাপইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিল্লুল হক,বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, গদারমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কবির উদ্দীন, আমেরতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিজয় ভুষন দাস, কান্তা ঘোষ, পীরপুর গৌড়িপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিষ কুমার দাস, সহকারি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সোহাগ,নোয়া গাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পিংকু দাস,কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হেপী দত্ত,বড় সৈদের গাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাওন চক্রবর্তী রাজন,জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইদুল আলম ডালিম, মল্লিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিজাম উদ্দীন, জাউয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পাপলু, কৈতক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পরিতোষ পুরকায়স্থ, কালেশ্বরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল ইসলাম পলাশ, রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মইনুল ইসলাম, নোয়াগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সোলেমান হোসেন, শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুসাইবা নুসরাত, চৌকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দুলাল আহমদ,লক্ষমসোম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কয়েছ উদ্দিন, আনুজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহবাজ আলী,রাজারগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মৌ রায়,শাহ আরপিন নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নির্মল শর্মা, ধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুরজ্ঞিত দাস,কেজাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মইন উদ্দীন, দারোগা খালি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিন্টু রিশি,মাহমদ আলীসহ ১শত ২০জন শিক্ষক শিক্ষিকরা। তারা নিজ নিজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে শিক্ষা সফরে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া জেলা শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যে সহ নানা দুনীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব শিক্ষকদের মাধ্যমে নিয়োগ বানিজ্যে করার অভিযোগের ঘটনায় জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকতার বিরুদ্ধে দুদকে জনৈক ব্যক্তি বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ।
জেলা আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে ১শত ২০জন সহকারি শিক্ষক তিনটি কোষ্টার ৪০টি সিটা গাড়ি নিয়ে গত সোমবার সকালে সিলেটের জাফলং উদ্দেশে জাউয়া গোবিন্দগঞ্জ ও ছাতক থেকে বের হন। জনৈক এক শিক্ষক বলছে শিক্ষা সফরে গেলে ছুটি লাগবে না বলে ফেইসবুকে মন্তব্য করেন।
এব্যাপারে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান ছুটি না নিয়ে সহকারি শিক্ষকরা চলে গেছেন শিক্ষা সফরে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকতা মাসুম মিয়া সহকারি শিক্ষকরা শিক্ষা সফরের এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে তারা ছুটি নিয়ে শিক্ষা সফরে গেছেন।
এব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকতা আব্দুর রহমান জানান,বিদ্যালয় বন্ধ রেখে নয়,ছুটি নিয়ে শিক্ষা সফরে তিনি গেছেন।
এব্যাপারে সিলেটের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় অধিপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন জানান,শিক্ষা প্রতিষ্টান বন্ধ রেখে শিক্ষকরা শিক্ষা সফরে যাবার কোন নিয়মনীতি নেই । এ রকম অনিয়ম করে শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা কর্মকতা আনন্দ ভ্রমণে গেছেন কিনা-খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।