আলোচিত খবরউপজেলাদূর্নীতিবিভাগ ও জেলাসারাদেশ

এসিল্যান্ডসহ ৯জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ছাতক ভূমি অফিসে আগে টাকা পরে কাজ

এসিল্যান্ডসহ ৯জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
ছাতক ভূমি অফিসে আগে টাকা পরে কাজ
ছাতক প্রতিনিধি,
উপজেলার ভূমি অফিস নানা দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। টাকা না দিলে নিষ্পত্তি হয় না কোনো কাজ। ফাইল ঝুলে থাকায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন এই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। ২০১৯ সালের এপ্রিলের ১ম সপ্তাহে ছাতক ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার হিসাবে তাপস শীল যোগদানের পর অজয় রায় ও জগদিশ মন্ডল নামে বহিরাগত দু’জনকে তার ব্যক্তিগত কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে তাদের মাধ্যমেই লাখ-লাখ টাকা অবৈধ ভাবে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সেবাগ্রহীতারা। এসিল্যান্ড তাপসশীল যোগদান করার পর থেকেই মূলত হয়রানি আরও বেড়েছে। খতিয়ানের নামজারি, মিস কেস, হাল দাখিলা, ভূমিহীনদের নামে জমি বন্দোবস্ত দেয়াসহ সব কাজে টাকা দিতে হয় দু’জন অজয় রায় ও জগদিশ মন্ডল নামে বহিরাগত। এদের মাধ্যমেই এসিল্যান্ড লাখ লাখ ঘুষ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন কোম্পানির নামজারির ফাইল অহেতুক মাসের পর মাস পড়ে থাকলেও স্বাক্ষর করেন না এই কর্মকর্তা। তার এই খামখেয়ালিতে জিম্মি হয়ে আছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার মানুষ। আগে টাকা পরে কাজ ভুমি অফিসে টাকা ছাড়া ছাতক উপজেলা ভূমি অফিসে কোনো কাজ হয় না বলে অভিযোগ করেছেন সেবাগ্রহীতারা।ওই অফিসে প্রতিনিয়ত হয়রানি, দুর্নীতি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। সেখানে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা এমন মাত্রায় পৌছেছে যে, অনেক ক্ষেত্রে ঘুষ দেয়ার পর ও কাজ হয় না। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করতে তাদের নথিপত্র পর্যন্ত গায়েব করে দেয় অজয় রায় ও জগদিশ মন্ডল নামে বহিরাগত দু’ব্যক্তি। তাদের মাধ্যমে জাল দলিলে জমির নামজারি হয়ে যাচ্ছে অন্যের নামে। নামজারি, খারিজ, খাজনা প্রদানসহ অন্যান্য কাজে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তার দু’ব্যক্তি হচ্ছেন দালাল অজয় রায় ও জগদিশ মন্ডল এসিল্যান্ড তাপসশীল নামেই প্রকাশ্যে ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসব চলছে ঐতিহ্যবাহী ছাতক ভূমি অফিসে। উপজেলার বিভিন্ন ভূমি অফিসে নামজারীর প্রতি নথিতে অফিস খরচ’ নামে টাকা নির্দিষ্ট করে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ড, তহসিলদার,সাভেয়ার ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে বিভিন্ন ভুমি অফিসে ভূমি সেবা নিতে আসা সেবাপ্রার্থীদের তথ্যমতে, পুরো উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও একটি উপজেলা ভূমি অফিসের ভূমি সংশ্লিষ্ট সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এসব অফিসে ভূমি সংশ্লিষ্ট সেবা নিতে প্রতিটি কাজের জন্য এমনকি পরামর্শ নিতেও টাকা গুনতে হয়। ভূমি অফিসের প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে ভূমি কর্মকর্তা সার্ভেয়ার, কানোনগো অফিস সহায়ক ও কয়েকশ দালালের প্রতিনিয়ত হয়রাণী। প্রত্যেকটা ভূমি অফিসের নিয়ন্ত্রণ ভূমি কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা দালালদের হাতে। অফিসে চেয়ার টেবিল নিয়ে কর্মকর্তাদের মতো দালালরাও কাজ করেন। গুরুত্বপূর্ণ সরকারী নথি,অফিসের রেকর্ডপত্রও দালালদের হাতে থাকে। ভূমি কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি কোন ভূমি মালিক যোগাযোগ করলে তাঁরা দালালদের ধরিয়ে দেন। দালালদের মাধ্যমে টাকা পেলে দালালদের প্রস্তুত করা নথিতে ভূমি কর্মকর্তারা সই দেন, টাকা না দিলে বিভিন্ন কারন দেখিয়ে নামজারীর নথি বাতিল করে দেয়া হয়। ছাতক ভূমি অফিসে ভূয়া নামজারী, পাতা ছিড়ে ফেলা, দূর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের মহোৎসবের এ ঘটনায় উপজেলার সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভূমি অফিসের প্রধানকর্তা তাপস শীলের নেতৃত্বে এসব অপকর্মের একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠার অভিযোগ উঠে। এ চক্রের ইশারা ছাড়া এ অফিসে কোন কাজ না বলে অভিযোগ রয়েছে। তার অফিসে ঘুয় দুনীতি অনিয়ম নানা অন্যায় ও অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় সংবাদকর্মী সহ ৭জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরে ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন এ অফিসের কর্তাব্যক্তিরা। তার অফিসে অন্যায় ও অপকর্মের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার সহকারী কমিশনার তাপসশীলসহ ৯জনের বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব,দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, ভূমি মন্ত্রীর একান্ত সচিব,সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার,জেলা প্রশাসক, ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ছাতক সদর ইউনিয়নের ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের নাজমুল ইসলাম বাদী হয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ্য করেন সহকারী কমিশনারের আস্থাভাজন অজয় রায়কে অফিসের রক্ষিত স্বত্বলিপিতে নামজারী খতিয়ান লিপিবদ্ধ ও কর্তন সহ নামজারী মোকদ্দমার সকল আদেশ লেখার দায়িত্ব দেয়া হয়। অপরদিকে জগদিশ মন্ডলের মাধ্যমে প্রতিটি নামজারী মোকদ্দমায় সর্বনি¤œ আট হাজার টাকা থেকে লক্ষাধিক টাকা তিনি কৌশলে হাতিয়ে নেন। এছাড়া ছাতকে সুরমা নদীতে অবৈধ ভিট বালু উত্তোলনের মাসোহারা তার সহযোগী সত্যলাল রায়ের মাধ্যমে ২শতাধিক নৌকা থেকে ৫ হাজার টাকার মাসোহারা আদায় করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সুরমা নদী থেকে যে নৌকা তাদের কথামতো টাকা না দিলে নৌকা আটক করে জরিমান করেন এসিল্যান্ড। সহকারী কমিশনারের ব্যক্তিগত দু’জন কর্মচারীদের নানা অনিয়ম দুনীীতি দাপটে অফিসের দায়িত্বশীলরা অসহায় হয়ে পড়ায় নিয়মিত কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। এব্যাপারে সহকারি (ভুমি) কমিশনার তাপসশীল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন অফিসে বহিরাগত ২ ব্যক্তি মধ্যে জগদিশ মন্ডল তার কর্মচারি হলে ও অজয় পাল নামে তার কোন কর্মচারী নেই বলে মন্তব্য করেন। পরে সে ছাতক থেকে বদলী হয়ে দিরাইয়ে চলে গেছেন ্বলেই মোবাইল কেটে দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!