
ওসির বদলি খবর শুনে কাঁদছেন ছাতকে মানুষ
ওসির বদলি খবর শুনে কাঁদছেন ছাতকে মানুষ
সুনামগঞ্জের শিল্পনগরী ছাতক থানার ওসি মাহবুবুর রহমানের বদলির খবর শুনে কাদছেন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। তার বদলির কোথায় হচ্ছে কেউ সঠিক করে বলতে পারছেন না ।
এ খবর নিয়ে একটি চত্রু সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকের মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল করে তোলা হয়। তিনি ওসি হিসেবে ২০২২ সালে ১৯ জানুয়ারী যোগদান করেন ছাতক থানায়। তিনি যোগদানের পর ছাতক থানায় প্রায় “দালালমুক্ত”।অল্পদিনে ও থানার কাজ কমের মাধ্যমে সকল শ্রেণির মানুষের মন জয় করেছে । থানা মানেই টাকা। এখানে টাকা ছাড়াই কোনো কাজ হতো না। সকল শ্রেনীর মানুষের এমন ধারণাই পাল্টে দেন ওসি) মাহবুবুর রহমান। ওসি হিসেবে যোগদানের প্রথম সপ্তাহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে থানার দালাল চিহিৃত করে তালিকা তৈরি করে। এর ঘটনায় তার ওপর দালাল চত্রুরা ক্ষোব্ধ হয়ে উঠেছে।
এ থানায় সেবা নিতে আসা লোকজন টাকা ছাড়াই এখন সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অভিযোগ ও মামলা লেখা বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারছেন । পুলিশের আচরণ যেমন পাল্টেছে,তেমন থানার চিত্রও বদলেছে। এতে আগের তুলনায় থানায় সেবার মানও অনেকই বাড়ছে বলে ভুক্তগোরী জানিয়েছে। অপরাধীরা যেন, অপরাধ করে পার না পায় সে বিষয়েও তিনি কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।
মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ,দালালচত্রু, ভূমি দস্যুদের কাছে ওসি মাহবুবুর রহমান যোগদানের পর এক আতংকের নাম ছিল।
পুলিশ সর্বদাই জনগনের বন্ধু এবং জনগনের জানমাল রক্ষার প্রহরী। পুলিশ-জনতা এক সাথে মিলে কাজ করলে দেশ থেকে অপরাধ কমে যাবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তবে ওসি বদলির কোন আদেশ সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কায্যালয়ে আসেনি বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাইদ।
তার বদলির কথা শুনে অনেক দালাল চত্রুরা
সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকের ব্যাপক লেখালেখি হচ্ছে। তার বদলির খবর শুনে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন হাট বাজারে বসে চোখের অশ্রু ঝড়ছে এবং নিরবে কাদছেন। এ থানায় যোগদানের প্রায় এগারো মাসের মধ্যেই সৃজনশীল ও যুগোপযোগী পরিকল্পনার ফলে ছাতক থানা ও পুলিশ হয়ে উঠেছে এ উপজেলার ১৩টি ইউপি ও একটি পৌর সভার ৫ লাখ মানুষের আস্থার নিরাপদ ঠিকানা। অল্পদিনেই পাল্টে যায় ছাতক থানার অপরাাধে চিত্র। আলোচনা এবং সমালোচনার মধ্যদিয়ে তিনি ছাতক থানার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দিন-রাত পরিশ্রম করেন।তার নেতৃত্বে হাজার হাজার কোটি টাকার হাদার টিলা রক্ষা করতে গিয়ে তার বিরুদ্ধে দালাল চত্রুরা নানা অপপ্রচার শুরু করেছিল। এ ঘটনার পর একটি সিন্ডিকেট চত্রু ওসি মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অসংখ্য ফেইসবুকে নামে বেনামে ভূয়া ফেইসবুক পেইজ ও আইডি থেকে ওসির বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট মনগড়া ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে অপপ্রচার করতো । কিন্তু এসব সমালোচনার কোন তোয়াক্কা না করে গরু চুরি, মারামারি, খুন, মাদক-সন্ত্রাস ও ভূমি দস্যু বাল্যবিবাহমুক্ত শান্তির জনপদ হিসেবে ছাতক থানাকে গড়তে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেন তিনি। ছাতক উপজেলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাদক-সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রনে ওসি মাহবুবুর রহমান এর ভূমিকা সর্বস্তরে প্রশংসনীয়। এছাড়াও তিনি সফলতার সাথে বিভিন্ন গরু চুরি, ডাকাতি, নারী নিযাতন, ধর্ষন, ছিনতাই, মোটর সাইকেল চোর, অস্ত্র-মাদক বিরোধি অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হন ওসি।তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মাদক-সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য খ্যাত ছাতক উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন আগের তুলনায় মাদক-সন্ত্রাস নির্মূলের দ্বারপ্রান্তে। শুধু তাই নয়, তিনি যোগদানের পর থেকে থানা এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডও দিন দিন কমতে শুরু করেছে। তার কর্মদক্ষতার মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ নিয়ে তার অধিনস্থ অফিসারদের সর্বদা নির্দেশ দিয়ে থাকেন তারা যেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সেবায় কাজ করেন তিনি ।
ছাতক থানার ওসি মাহবুবুর রহমান যোগদানের আগে উপ-পরিদর্শক পদে মৌলভীবাজার, বি-বাড়িয়া ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পুলিশ পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তিনি কাজ করেন। এর পর দেশে ফিরে ওসি হিসাবে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করেন।
সিলেট বিয়ানীবাজার উপজেলার আকাখাজনা গ্রামের মরহুম ইন্তাজ আলীর সু-যোগ্যপুত্র ওসি মাহবুবুর রহমান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে এমএসসি পাশ করে ১৯৯৮ সালে প্রথমেই উপ-পরিদর্শক (সাব-ইন্সপেক্টর) হিসাবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। এব্যাপারে ওসি মাহবুবুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন দালালচত্রুরা তার নামে বিভিন্ন দপ্তরে
ঠিপসই দিয়ে একাধিক অভিযোগ দায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ভুয়া ফেইসবুক আইডি দিয়ে বেনামে অপপ্রচার না করে প্রকৃত মা-বাবার সন্তান হয়ে থাকলে সঠিক নাম দিয়ে সামনে এসে কথা বলার অনুরোধ করেন তিনি। বদলি তো চাকরিরই একটি অংশ। তবে ছাতকবাসীর মানুষের মন জয় করতে পেরেছি এটাই তো তার বড় পাওনা। এছাড়া তার বদলির কোন আদেশ এখনো পায়নি।