আইসিটির একজন সফল
উদ্যোক্তা ছাতকে
ছাতক প্রতিনিধি,
আইসিটি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল জুনায়েদের। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ঐকান্তিক শ্রম ও নিষ্টার সাথে চেষ্টা চালিয়ে অল্প সময়েই সে সফলতার মূখ দেখতে পেয়েছে। সরকারী ভাবে পৃষ্টপোষকতা পেলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে এমনটাই তার প্রত্যাশা। সে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের মুলতানপুর গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের পুত্র ও বাংলাদেশ আনসার-গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন ভিডিপি সদস্য। লেখা পড়ার পাশাপাশি আনসার ও ভিডিপি সিলেট কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ২০১৫ সালে ১০ সপ্তাহের একটি কম্পিউটার মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি সিলেট জেলা আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট ফখরুল ইসলাম ও কম্পিউটার প্রশিক্ষক বিপ্লব চন্দ্র সাহা’র উৎসাহ ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুারো সিলেট অফিসের সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম ভুইয়া’র সহায়তায় সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজারে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে উপানুষ্ঠানিক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নামে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেন। কিছু দিনের মধ্যেই সে একাডেমিক কোচিং সেন্টার ও সেমিনার হল এন্ড পার্টি সেন্টার চালু করতে সক্ষম হন।
জুনায়েদ ২০১৮ সালের জাতীয় সমাবেশে বাংলাদেশ ভিডিপি (সেবা) পদক লাভ করে। এখানের হাওর জনপদে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে তার ব্যবসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়। করোনা মহামারি কালে বিশেষ উদ্যোগ ও আগ্রহে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বাসা বাড়িতে ওয়াইফাই সংযোগ প্রদান করে যাচ্ছে এ উদ্যোক্তা। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষিত শিক্ষার্থীদের চাকুরি প্রদানের জন্য জাউয়া বাজারে অপর একটি ভবনে প্রয়াস কম্পিউটার সেলস্ এন্ড সার্ভিস সেন্টার নামে আইসিটি ডিভাইস এবং এক্সেসরিজের ব্যবসা চালুর যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এ পর্যন্ত তার মাধ্যমে ৫শ’ প্রশিক্ষনার্থী কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে প্রশিক্ষনার্থী রয়েছে ৪৮জন। প্রথমে সামান্য কিছু পূজি বিনিয়োগে তার যাত্রা শুরু হয়। বিনিয়োগের অর্জিত আয়ে চলছে আবার বিনিয়োগ। বর্তমান বিনিয়োগের পরিমান ত্রিশ লক্ষ টাকারও বেশি। তার ব্যবসা সম্প্রসারণ তথা আইএসপি ওয়াইফাই সার্ভিস, সিসি ক্যামেরা, উদ্যোক্তা প্লাটফর্ম (ফ্রিলান্সার তৈরি) বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরিতে আরও দক্ষতা অর্জনে সে বন্ধ পরিকর।
করোনা পরিস্থিতিতে স্থবির হয়ে যাওয়া কার্যক্রম চালু করার দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য গত ২৪ আগষ্ট বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সিলেট রেঞ্জ পরিচালক রফিকুল ইসলাম, সিলেট-সুনামগঞ্জ জেলার জেলা কমান্ড্যান্ট কবি এনামুল খাঁন এখানে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে কর্মকর্তারা ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে নতুন মাত্রায় কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার ও একাডেমিক কোচিং সেন্টার চালু করার পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে তাকে টেকনিক্যাল ও কৌশলগত সকল প্রকার সহায়তা করার আশ্বাস দেন রেঞ্জ পরিচালক। আইসিটির সফল উদ্যোক্তা জুনায়েদ চার ভাই ও দু’বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। মেধা ও চঞ্চলতায় সর্বদাই সে অন্যদের থেকে আলাদা। ৮ বছর বয়সে উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের রায়সন্তোষপুর গ্রামে ফুফুর বাড়িতে লজিং থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। পরে সিলেটের বিভিন্ন মাদরাসা থেকে দাখিল, আলিম, ফাজিল এবং কামিল পাশ করেন সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা থেকে। তিনি বলেন, লেখা পড়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে কোন চাকুরীর পিছনে না ঘুরে উদ্যোক্তার চ্যালেঞ্চ গ্রহণ করে অল্প পূঁজিতে চার বছরে ত্রিশ লক্ষাধিক টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে সক্ষম হয়েছেন। তার এমন সফলতা দেখে সকলেই মুগ্ধ হয়ে আরও উৎসাহ দিচ্ছেন। সরকারী ভাবে পৃষ্টপোষকতা পেলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে এমনটাই তার প্রত্যাশা। ##
Leave a Reply