প্রবাসে প্রতিষ্ঠিত এক স্বাবলম্বী নারীর জীবনসঙ্গী অনুসন্ধান
বিশ্বাস, সততা ও সম্মান—সম্পর্কের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
ডেস্ক রিপোর্ট :
বিবাহ—এটি কেবল দুটি মানুষের বন্ধন নয়, বরং দুটি জীবনের সহযাত্রা, দুটি মানসিকতার মিলন এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের এক গভীর অঙ্গীকার। আধুনিক সময়ের বাস্তবতায় সেই বিবাহের ধারণাও বদলাচ্ছে। আর্থিক সক্ষমতা, সামাজিক অবস্থান কিংবা লিঙ্গভিত্তিক নির্ভরশীলতার পুরোনো কাঠামো ভেঙে তৈরি হচ্ছে নতুন সমীকরণ। এমনই এক ব্যতিক্রমী ও সাহসী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রবাসে স্থায়ীভাবে বসবাসরত একজন উচ্চশিক্ষিত, স্বাবলম্বী মুসলিম নারী—আইয়েশা সিদ্দিকা।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসরত আইয়েশা সিদ্দিকা পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত সুপ্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিনের অধ্যবসায়, শিক্ষা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তুলেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আর্থিকভাবে তিনি স্বচ্ছল এবং আত্মনির্ভরশীল। জীবনের এই পরিপূর্ণতা থেকেই তিনি এখন একজন যোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য ও মানবিক জীবনসঙ্গী খুঁজছেন—যিনি তার জীবনের অংশ হয়ে প্রবাসে নতুন জীবন শুরু করতে আগ্রহী হবেন। আইয়েশা সিদ্দিকা বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, বিয়ে মানে কেবল দায়িত্ব নয়, এটি বন্ধুত্ব, সম্মান এবং পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক। জীবনে অনেক কিছু অর্জন করেছি, এখন চাই এমন একজন মানুষ—যার সঙ্গে জীবন ভাগ করে নেওয়া যাবে, সুখ-দুঃখের সঙ্গী হওয়া যাবে।”
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পরিচয় আইয়েশা সিদ্দিকা একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী হলেও তিনি আধুনিক জীবনদর্শন ও বাস্তবতাকে সমান গুরুত্ব দেন। বয়স ও উচ্চতা নিয়ে তার কোনো কঠোর অবস্থান নেই—তার কাছে এসব বাহ্যিক বিষয়ের চেয়ে মানুষের চরিত্র, মানসিকতা ও মূল্যবোধ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষাগত দিক থেকে তিনি পরিপূর্ণ ও সুপ্রতিষ্ঠিত। পেশাগত জীবনে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী, যার ফলে আর্থিক দিক থেকে কারও ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন তার নেই। বরং তিনি দৃঢ় কণ্ঠে জানিয়ে দিয়েছেন—তার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গীর আর্থিক অবস্থা নিয়ে তার কোনো শর্ত নেই।
“আমি চাই না অর্থ বা সম্পদ কোনো সম্পর্কের মাপকাঠি হোক,” বলেন আইয়েশা। “মানুষের সততা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং দায়িত্ববোধ—এই গুণগুলোই আমার কাছে সবচেয়ে দামী।”
কেমন জীবনসঙ্গী চান তিনি।আইয়েশা সিদ্দিকার প্রত্যাশা খুব স্পষ্ট এবং বাস্তবসম্মত। তিনি এমন একজন পুরুষ জীবনসঙ্গী খুঁজছেন—চরিত্রে বিশ্বস্ত ও সৎ, যিনি প্রতারণা বা দ্বিচারিতায় বিশ্বাস করেন না । শিক্ষাগতভাবে ন্যূনতম স্নাতক (Bachelor’s) পাস।প্রবাসে মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা রয়েছে, নতুন পরিবেশে শেখার ও এগিয়ে যাওয়ার আগ্রহ আছে স্ত্রীকে সম্মান করতে জানেন, মতের পার্থক্যকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করেন নেশা ও খারাপ অভ্যাসমুক্ত, সুস্থ ও দায়িত্বশীল জীবনযাপনে বিশ্বাসী পরিবারপ্রেমী ও দায়িত্ববান, বাবা-মা ওআত্মীয়স্বজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তার ভাষায়, “আমি কোনো রাজপুত্র খুঁজছি না, আমি খুঁজছি একজন ভালো মানুষ—যার সঙ্গে নিরাপদ ও শান্ত একটি সংসার গড়া যাবে।”
ব্যতিক্রমী ঘোষণা এই প্রস্তাবের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী ও আলোচিত দিক হলো—বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি নিজ দায়িত্বে এবং নিজের খরচে তার জীবনসঙ্গীকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবেন। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করলেও আইয়েশা একে দেখছেন দায়িত্ব ও ভালোবাসার জায়গা থেকে। তিনি বলেন, “যদি আমি সক্ষম হই, তাহলে আমার জীবনসঙ্গীর জন্য সেটুকু করা আমার দায়িত্ব। সম্পর্ক মানে হিসাব নয়, সম্পর্ক মানে পাশে থাকা।”।এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি সমাজে প্রচলিত পুরুষ-নির্ভর বিবাহ কাঠামোর বাইরে এসে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ তৈরি করেছেন—যেখানে নারীও সমানভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, নেতৃত্ব দিতে পারে এবং সম্পর্কের ভার বহন করতে পারে।
সামাজিক বাস্তবতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, প্রবাসে বসবাসরত শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী নারীদের মধ্যে এ ধরনের চিন্তাধারা ক্রমেই বাড়ছে। তারা এখন বিয়ে মানেই আর্থিক নিরাপত্তা নয়, বরং মানসিক শান্তি ও পারস্পরিক সম্মানকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। এই প্রস্তাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এটিকে সাহসী ও ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ একে সামাজিক রীতির বাইরে বলে মন্তব্য করছেন। তবে আইয়েশা সিদ্দিকা এসব সমালোচনায় বিচলিত নন। আমি কারও ধারণা ভাঙতে চাই না,” তিনি বলেন, “আমি শুধু আমার জীবনের জন্য সঠিক মানুষটি খুঁজছি—এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।”
যোগাযোগের নিয়ম আগ্রহী প্রার্থী অথবা তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশে জানানো হয়েছে—শুধুমাত্র প্রকৃতভাবে আগ্রহী ব্যক্তিরাই যোগাযোগ করবেন। বায়োডাটা ও সাম্প্রতিক ছবি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে। যোগাযোগের জন্য ইমেইল ঠিকানা ও হোয়াটসঅ্যাপ/ফোন নম্বর কমেন্ট বক্সে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। উপযুক্ত মনে হলে তিনি নিজেই ফিরতি যোগাযোগ করবেন। সম্পর্কের সংজ্ঞা বদলাচ্ছে। আত্মমর্যাদা, সম্মান ও সমানাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে উঠছে নতুন দাম্পত্য ভাবনা। আইয়েশা সিদ্দিকার এই জীবনসঙ্গী অনুসন্ধান কেবল একটি বিয়ের প্রস্তাব নয়—এটি এক পরিবর্তিত সময়ের প্রতিচ্ছবি, যেখানে নারী নিজের জীবন নিজেই পরিচালনা করে, নিজের পছন্দ নিজেই নির্ধারণ করে। সম্ভবত এটাই আধুনিক সম্পর্কের সবচেয়ে সুন্দর দিক—যেখানে ভালোবাসা শর্তহীন, আর সম্মানই সবচেয়ে বড় অলংকার।
Leave a Reply