সালিশে উপস্থিত না হওয়ায়
৫টি পরিবারকে একঘরে
ছাতক প্রতিনিধি
পঞ্চায়েতের সালিশে না যাওয়ায় ৫টি পরিবারকে গত ২১ দিন ধরে সমাজচ্যুত (একঘরে) করে রাখা হয়েছে। এ সালিশে উপস্থিত না হওয়ায় ৫টি পরিবারকে একঘরে সমাজচ্যুত ঘোষনা করেছেন সালিশ কমিটির সভাপতি। তিনি দোলার বাজার ইউপির পালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, সৈয়দ আহমদ কবির,জহির মিয়া মনির উদ্দিন,কছির আলী, জামাল মজুমদার ও মনো মিয়াসহ গ্রামের মাতব্বররা সালিশ ডেকে তাদের একঘরে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন ও উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, উপজেলার ছৈলাআফজলাবাদ ইউপির বিনোদপুর গ্রামের আব্দুল খালিক মনাই ও আকবর আলীর মধ্যে জমি সংত্রæান্ত বিরোধ নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় জের ধরে এলাকার প্রভাবশালী মাতব্বররা সালিশ ডেকে গত ২৩ নভেম্বর এলাকাবাসীর উদ্দ্যোগে ছৈলাআফজলাবাদ ইউনিয়নের খলাগাও গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের বাড়িতে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্টিত হয়। এ সালিশে উপস্থিত না হওয়ায় ৫টি পরিবারকে একঘরে সমাজচ্যুত ঘোষনা করা হয়। তারা হচ্ছেন কবি আব্দুল আজিজ চৌধুরী,আছরব আলী,রহমত আলী রফিকুল ইসলাম ও আব্দুল হামিদ চৌধুরী। তাদের কথামতো সালিশে না উপস্থিত না হওয়ায় ৫টি পরিবারকে একঘরে সমাজচ্যুত ঘোষনা করেছে গ্রামের প্রভাবশালী মাতব্বররা। এছাড়া তারা বলে সরকারি কিংবা পঞ্চায়েতের কোন রাস্তায় চলাচল করলেই দেখা মাত্র মারপিট ও হত্যা করার হুমকি দেয় দুর্নীতিবাজ মাতব্বররা। গত ২৫ নভেম্বর আছরব আলী তার বাড়ি থেকে সুনামগঞ্জ জেলা দায়রা জজ কোটে একটি মামলার হাজিরা দিতে তার বাড়িতে থেকে সুনামগঞ্জ যাবার পথে বিনোদপুর -গোবিন্দগঞ্জ সরকারি রাস্তায় গোবিন্দগঞ্জ কলেজ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় পৌছা মাত্র তার প্রতিপক্ষের লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে হামলার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় নিস্পতির করার লক্ষ্যে প্রধান শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বিনোদপুর গ্রামের আছরব আলীর কাছে গোবিন্দগঞ্জ ট্রাাফিক পয়েন্ট একটি দোকানে বসে দশহাজার টাকার ঘুষ দাবি করেন। এ টাকা না দেয়ায় সালিশ কমিটির সভাপতি ক্ষোব্ধ হয়ে ৫টি পরিবারকে একঘরি করার সিদ্ধান্ত দেয়। পরে বাধ্য হয়ে ১৪ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকসহ ৭জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবরে বিনোদ পুর গ্রামের আছরব আলী বাদী হয়ে গত সোমবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এব্যাপারে সালিশ কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলে সালিশ কমিটি সভাপতি ছিলেন। একঘরি করার কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এব্যাপারে ইউপি মেম্বার আব্দুল মতিন জানান সালিশ বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছে সত্য,কিন্ত সামাজিক বয়কট এমন সিন্ধান্ত নেয়া হয়নি।আছরব আলী জানান, ২১ দিন ধরে অবরোদ্ধ করে রাখা হয়েছে। রাস্তায় বের হলে মাতব্বররা পক্ষে লোকজন আমাদের এক ঘরে করার বিষয় নিয়ে বিরুপ (টিটকারি) করছে আর বলছে মামলা ও অভিযোগ দিয়ে কি হবে। কিছু করতে পারবে না। সারা জীবন একঘরে থাকতে হবে। ইউএনও মো,গোলাম কবির জানান, ‘বিষয়টি কেউ জানায়নি। তারা এটা কোনোভাবে করতে পারেন না। আমি খোঁজ নিচ্ছি। যারা এটা করেছেন অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ অভিযোগ প্রাপ্তি এ ঘটনায় সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,তদন্তপুবক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
Leave a Reply