এবার ছাতক সিমেন্ট কারখানার
গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন কারনে বন্ধ
ছাতক প্রতিনিধি,
এবার স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সঙ্কটে পড়েছে ছাতক সিমেন্ট কারখানা। উৎপাদন বন্ধ থাকা এই কারাখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস। প্রায় ৩১ কোটি টাকা বিল অনাদায়ে গ্যাস সংযোগ গত সোমবার বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। চুনাপাথর সঙ্কটের কারণে সপ্তাহ ধরে সরকারি মালিকানাধীন দেশের প্রাচীন এই সারকারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস সূত্রে জানা যায়, ছাতক সিমেন্ট কারখানার কাছে বকেয়া গ্যাস বিল বাবদ প্রায় ৩১ কোটি টাকা পাওয়া রয়েছে। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্যে সিমেন্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার লিখিত তাগিদ দেয়। একিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করেনি। ফলে গত সোমবার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হচ্ছে। বিসিআইসির এ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকার ফলে প্রতিদিন লক্ষ টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে সরকারকে। সিমেন্ট উৎপাদনের বিশেষ কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানিকৃত স্বল্প মূল্যের চুনাপাথর দুই বছর ধরে অধিক মূল্যে খোলাবাজারে বিক্রি করার ফলে বর্তমানে চুনা পাথর সংকটেও রয়েছে কারখানাটি। কারখানার কর্মকর্তারাই চুনাপাথর খোলা বাজারে বিক্রি করেন।
উৎপাদন বন্ধ থাকলেও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় দুর্ভোগ পড়েছেন কারখানার আবাসিক গ্রাহকরা। শ্রমিকদের অভিযোগ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দুর্নীতির কারণে এমন পরিস্থির সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের তথ্য নিশ্চিত করে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এফএম বারী বলেন, বকেয়া বিল পরিশোধ করে দু-একদিনের মধ্যে গ্যাস সংযোগ চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকার বিষয়ে এফএম বারী জানান, চুনাপাথর সংকটের কারনেই বর্তমানে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এদিকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বেকার হয়ে পড়েছেন কারখানার অস্থায়ী শতাধিক শ্রমিক।
১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কারখানাটি বিসিআইসির একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিলো। দূর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে কারখানাটি ধীরে ধীরে একটি লোকসানি প্রতিষ্টানে রূপ নেয়। একাধিকবার ব্যালেন্সিং মর্ডানাইজেশন রেনোভেশন এন্ড এক্সপেনশননের (বিএমআরই) মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে কারখানাটি উৎপাদন সচল রাখা হয়। গত এক বছর ধরে কারখানায় একটি কিলনের মাধ্যমে উৎপাদন সচল রাখা হয়। একটি কিলন কয়েক বছর আগে থেকেই বিকল হয়ে পড়ে। চালু থাকা কিলনটি প্রায়ই বন্ধ হয়ে মাঝে মধ্যে উৎপাদন পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে কারখানাটি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরের কাজ চলমান রয়েছে। কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া চলমান রেখেই প্রায় ৯শত কোটি টাকা ব্যয়ের এ কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও ওয়েট প্রসেসের কারখানায় প্রতিমাসে তিন চারবার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে। নতুন প্রজেক্টের কোটি কোটি টাকার চলমান কার্যক্রমেও রয়েছে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ। মূল কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়নার নানজিং সি-হোপ নামের কোম্পানির কাছ থেকেও কারখানার কর্মকর্তা-সিবিএ সহ একটি সিন্ডিকেট কাজ ভাগ বাগিয়ে নিয়ে কোটি কোটি টাকার দূর্নীতি করে টাকা লুঠে নিচ্ছে।এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। ছাতক সিমেন্ট কারখানার ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) অমল কৃঞ্চ বিশ্বাস জানান, চুনা পাথর স্বল্পতা ও পাম্পের কারিগরি সমস্যার কারণে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এ সমস্যা জটিল নয় শীঘ্রই উৎপাদন শুরু হবে
Leave a Reply