আলোকিত একটি জনপদ ছাতক
কবি সাংবাদিক- আনোয়ার হোসেন রনি
বাংলার স্মরনীয় বরণীয় প্রাচীনতম একটি জনপদ হচ্ছে ‘ আলোকিত ছাতক’ আলোকিত প্রচারবিমুখ ফকির সাধক,কবি,সাহিত্য,সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে লেখক সাধকদের অবদান আমাদেরকে বিশ্বের মানচিত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।বরেণ্য ব্যক্তিদের জীবনী তরুন সমাজে জাতীয় চেতনা ওপ্রকৃত সংস্কৃতিবোধ জেগে উঠবে এবং পুনরায় তাদের চিন্তা চেতনায় আমাদের মুল সংস্কৃতি ও চেতনারবোধের উন্মেষ ঘটবে এতে সন্দেহ নেই। অবিভক্ত বাংলার ফকির সাধক কবি সাহিত্যিক,সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের জীবন ধারা নতুন প্রজন্মের ও যুব সমাজের জনা একান্ত আবশ্যক। আমাদের যুব সমাজ অনেকে এদের সম্পকে তেমন অবহিত নয়। তৎকালিন লেখক,সাধক সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবিদের ক্ষুদ্রধারা লেখনী,সমাজ কল্যানমুলক কর্মকান্ড মুসলমানদের মধ্যে জাগরনের সৃষ্টি করে গেছেন। সংস্কৃতি ধর্মীয় চেতনা ইতিহাস লালন ও সংরক্ষন এবং ইসলামী সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটানোই ছিল মুসলিম কবি সাধকদের একমাত্র লক্ষ্যে প্রচারবিমুখ আলোকিত ফকির সাধক আফজলশাহ’র দীর্ঘ আধ্যতিœক পথ পরিত্রুমার গভীরতর পযালোচনা এবং এদের সাথে তার হাকিকতী সম্পর্কে ও বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন সবাধিক। তার লেখায় মধ্যে রয়েছে সুচিন্তিত সুশৃংখল চিন্তার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। তার জীবন কর্ম কালের ত্রুমানুসারে গুরুত্বপুন বিষয় বর্ননার রেখাচিত্র ফুটে উঠেছে সুন্দর ভাবে।যাঁরা সুফিবাদ ও তাসাউফকে অনুশীলন করতে আগ্রহী কিংবদন্তির আধ্যাতিœক ফকির সাধক আফজল শাহ’ র কে সেই প্রেক্ষাপটের উপলব্দি করতে অধিকতর আগ্রহী,তার লেখা মুল্যবান গ্রন্থ আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে বহুদুর পৌছিয়ে দিয়েছে। তার প্রখর লেখনীর তথ্যসুত্রের যোগান দেয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন খোরাক জোগানের ক্ষেত্রে এটি এক অনন্য গ্রন্থ রিসালায়ে মারিফাত ও
“নুর পরিচয়” গ্রন্থ নিয়ে দেশ-বিদেশে মাটিতে গবেষনা চলছে। সবার সাবির্ক সহযোগিতা কামনা করি।
তিনশ’ষাট আউলিয়ার উপ-মহাদেশের প্রধান বাংলার গৌরব আধ্যাত্বিক দরবেশ হযরত শাহ জালাল (রঃ) ইয়ামনির নিদেশে তার সহযোগিরা ছাতক উপজেলায় অরিন বন জঙ্গলে তাবু টাগিয়ে ইসলাম প্রচার করে গেছেন। তাদের সান্নিধ্য পেয়ে এ অঞলের শ’শ’ ওলি আউলিয়া দরবেশ ফকিরদের অবাধ বিচরন ভুমি ও সুফিবাদে রাজধানী বলা হয়ে থাকে এখনকার সাধকদেরকে ।কিন্তু অধিকাংশ সুফিবাদ মরমী কবি সুফিবাদদের উপর কিতার ও পান্ডলিপি রচনা করে বিশ্বের মানচিত্রে গৌরব স্থান দখল করেছে। তাদের আলোকিত ঞ্জান ভান্ডারের আমাদের পৌছে দিয়ে বহুদুরে।ইতিহাসে পাতায় তাদের নাম থাকলে ও তাদের জীবনকর্ম নিয়ে কোন ইতিহাস রচনা কেউ করেনি। তারা সব সময় রয়ে গেছেন প্রচার বিমুখ ব্যক্তিত্ব।তাদের মুল্যবান পান্ডলিপি গুলো আজ ও কালে পরিবতে হারিয়ে যেতে বসেছে। তাদের জীবন কর্ম যেন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।তাদের বিজড়িত স্মৃতি গুলো যেন আজ আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আপ্রান প্রচ্ষ্টো চালিয়ে যাব।
সিলেট এখনো এসব পংক্তিমালা কথাগুলো মানুষের মুখে মুখে ফিরেছে। সাম্প্রতিকালে মরমী কবি ফকির আফজল শাহ ওরফে আরমান আলীর’ মরমী কবি দুব্বির্ন শাহ,মরমী কবি আসদ উল্লাহ,মরমী কবি আজর আলীশাহ,সাবাল আলীশাহ,কাছিমআলীশাহ, ও মরমী কবি গিয়াস উদ্দিন,হাসিম আলীশাহ,মনুশাহ, সহ হৃদয় ছোয়া গানের সুরে সমগ্র সিলেট ছড়িয়ে পড়লে সুফিবাদ মরমী কবি ভাবের খনি হিসেবে ও বিখ্যাত হয়ে উঠে এখান গ্রাম পাড়া মানুষ।শুধু বানিজ্যিক আর শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত আ্ড়ালে খ্যতিমান অলি আউলিয়া ফকির দরবেশ’র বিচরন ভুমি আরব দেশের মা ও মাটি সাথে এ অঞলের মাটির মিলে মিশে রয়েছেন বলে জনশ্রæতি আছে।
ছাতক এক প্রাচীন জনপদ আলোকিত বানিজ্যিক জোন শিল্পনগরী হিসেবে সুলতানী আমল থেকে আনুষ্টানিক শোভা যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৭৫৭ সালে মীর জাফর আলী খা’রায়দৃলর্ভ ও জগতশেঠ গংদের চত্রæান্তে বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ্দৌলা বঙ্গের নদীয়া জেলার আম বাগানে ইংরেজদের সাথে এক রত্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাজিত হযে বাংলার স্বাধীনতায় সুর্য অস্তমিত হন। সিরাজ উদ্দৌলার পতনের পর বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর বাঙাল সুবাদার হিসেবে স্বীকৃত লাভ করেন। পরবর্তিকালে তার উপর ইংরেজরা অসন্তÍুষ্ট হয়ে মীর কাসেমকে স্থলবর্তি করে। মীর কাসেমের আমলে ইংরেজরা সিলেটের ছাতকে অনুপ্রবেশ করে এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী চুনা ব্যবসা করার জন্য মীর কাসেম কে দিয়ে সন্ধি করা হয়।১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ২৭ সেপ্টেম্বর মীর কাসেমের সাপক্ষে সিলেটের ছাতকে চুনা সরবরাহের সন্ধি করা হয়। কিন্তু ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর লোকজন চুনা সরবরাহের অজুহাতে সিলেটের ছাতকে মানুষের উপর অমানবিক উৎপিড়ন চালাতে থাকে। মীর কাসেম ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লোকজনদের অত্যাচার নির্যাতন থেকে ছাতক সিলেটসহ বাংলার মানুষের পাশে এসে দাড়ান। ইংরেজরা মীর কাসেমকে তাদের বিপক্ষে দেখে মীর জাফরকে বাংলার মসনদে পুনস্থাপন করে ১৭৬৩ সালে ১০ জুলাই সিলেটের ছাতকে চুনা ব্যবসা ব্যপ্তি জন্য ৫ম দফায় নতুন সন্বি পত্র প্রণয়ন করে।এই সন্বি পত্র মোতাবেক ইংরেজরা চুনার আয়করের অর্ধেক মালিক হয়ে যান।এ ভাবে মীর জাফরের সহযোগিতায় একটি একটি করে দেশীয় রাজ্য ইংরেজদের দখলে আসে থাকে। ১৭৬৫ সালে ইংরেজরা বঙ্গ বিহারও উড়িষার দেওয়ানী লাভ করায় সিলেট ও তাদের দখলে চলে আসে। এ সময় (জয়ন্তীয়া ও লাউড় রাজ্য ব্যতিত)সিলেটের নবাবদের অধিকৃত ভৃভাগের পরিমাণ ছিল ২৮৬১ বর্গমাইল।ইংরেজ কোম্পানি ২৮৬১ বর্গমাইল ভুভাগের শুধু মাত্র রাজস্ব আদায়ে নিযুক্ত হয়েছেন। শাসন ভার বা ফৌজদারি ক্ষমতা তখন নবাবগনের হাতেই ন্যস্ত হযেছিল। ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হিস্টিংস ভারতে ২৫০টি মত জেলা সৃষ্টি করা হয়েছে। তখন সিলেটকে ও জেলায় রূপান্তর করেছিলেন। পুর্ব বঙ্গের রাজস্ব সংগ্রহ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কর্ম নির্বাহের জন্য ঢাকা রেডিনিউ বোর্ড প্রতিষ্টিত লাভ করা হয়। সেই বোড হতে মিষ্টার থেকার সর্বোচ্চ কর্মচারী রূপে সিলেটের প্রথম আগমন ঘটেছিল। তখনকার সময় ইংরেজ কর্মচারীদের রেসিডেন্ট উৎপাদিতে আখ্যায়িত করা হতো। থেকারের সময় জয়ন্তীয়ার রাজা ছত্রসিংহ সিলেটের বৃটিশ প্রজাদিগকে নিপিড়িত করতেন। যে কারণ থেকারের আদেশানুসারে মেজর হেনিকার কর্তৃক পরিচালিত বৃটিশ সৈন্য জয়ন্তীয়া জয়ে সমর্থ হয়। এ ভাবে জয়ন্তীয়া কাছার ইত্যাদি রাজ্য সমুহ বৃটিশ শাসনের আওতায় সিলেটের কালেক্টরীর অন্তর্ভুত্ত হলে সিলেটের ভ ুভাগের আয়তন ৩হাজার ৮শ’বর্গমাইলে গিয়ে দাড়ায়। ১৭৮০ সালে সেখান থেকে চলে গেলে ও রবার্ট লিন্ডসে নামক এক ইংরেজ কাউন্সিলার সিলেটের ক্যালেক্ট হয়ে আরো ফিরে এসেছেন । এখানে এসে লিন্ডসে সিলেটের সম্পদের প্রতি ধারণা লাভ করেন। তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এখানে প্রচুর টাকা বিনিময় করে বিভিন্ন জাতীয় ব্যবসা যেমন’চুনাপাথর,লবন,হাতির চামড়া,জাহাজ তৈরি ও কমলালেবু বিত্রিæ ইত্যাদিতে আতœনিয়োগের কাযক্রম শুরু করেন। তিনি অফিসের সময়টুকু দিয়ে বাকি সময়টুকু ব্যবসায় ব্যয় করে লিন্ডসে অগাধ অর্থ উপাজন করেন।এ সময় সিলেটের লোক সংখ্যা ছিল ১ লাখ।আর রাজ্যস্য ছিল ২লাখ ৫০ হাজার।লিন্ডসে আতœজীবনী গ্রন্থেও বরাত অচ্যুত চরণ চৌদুরী সহ অনেক ঐতিহাসিক গন লিখে গেছেন। প্রদেশের দায়িত্ব লাভ ও বেশী দিন থাকার জন্য লিন্ডসে ইংরেজ কোম্পানির উধতর্ন কর্মকতাদের বহু উপহার দেয়।
উল্লেখ যে’ বৃহত্তর সিলেটের ছাতকের সুলতানী আমল থেকে চুণা ব্যবসায় প্রসিদ্ধ লাভ করেছিল। ১৭৭৮ থেকে ১৭৮৯ খ্রীষ্টাব্দ পযন্ত রর্বাট লিন্ডসে ছিলেন সিলেটের কালেষ্টার। তিনি সিলেট থেকে ছাতকের চুন ভান্ডার দেখে আকৃষ্ট হয়ে তখন সিমেন্ট আবিস্কার করা হয়নি। ফলে চুনা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন নিমার্ন সামগ্রী হিসেবে বিশ্বে ব্যাপক চাহিদা ছিল। চুন সুরকি দেয়াল বা চাদ তখন ছিল উচ্চবিত্তের পরিচায়ক। গরম বা শীতল আবহাওয়ার এই চুনার নির্মিত দালান অত্যন্ত উপযুক্ত ছিল। চুনা পাথর থেকে বিশেষ কায়দায় তৈরি চুনার চাহিদা ছিল উপমহাদেশের সর্বত্র । ভাগ্যান্বেসী লিন্ডসে এই চুনা পাথরকে ভিত্তি করে গড়ে তুলেন কারখানা।পাশাপাশি দেশ ভারতের কলকাতার সাথে শুরু করেন ব্যবসা। উল্লেখ্য তখন ইংরেজী কর্মচারীদের জন্য এ ধরনের রুজি রোজগার কোনো বিধি নিষিধে ছিল না। লিন্ডসের পর দুইজন ইংরেজ এইচটি রাইট ও জর্জ ইংলিশ রাইট ইংলিশ এন্ড কোম্পানী নামে চুনের ব্যবসা শুরু করেন।তারা সব সময় ছাতকের নাগরিকদের সাথে সু-সম্পক বজায় রাখে।এ পথ ধরেই ছাতকের চুন শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। ১৮৬৯ খ্রীষ্টাব্দে ইন্ডিয়া জেনারেল ষ্টীম নেভিগেশন কোম্পানী গোয়ালন্দ থেকে সিলেট পযর্ন্ত জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করেন। ছাতক একটি বিশাল নৌ বন্দরের ষ্টেশন ছিল। শীতকালে জাহাজ ছাতক পযর্ন্ত চলতো দেশ-বিদেশে। নদীর পথে জাহাজ চলাচল শুরু হবার কারনে ব্যবসার ও বিস্তার ঘটে। ১৯০২ থেকে ১৯০৩ খ্রীষ্টাব্দ পযর্ন্ত সিলেট থেকে কলিকাতা ২০লক্ষ মনের বেশী চুন রপ্তানী করা হতো । চুনের মান ছিল ভালো,তাই প্রসিদ্ধির ও ছিল।এই চুনা শিল্পের পথ ধরেই এ অঞলে প্রথম বৃহৎ শিল্প কারখানা আসাম বেঙ্গল সিমেন্ট ফ্যাষ্টরী প্রতিষ্টিত করেছিল। এ পযর্ন্ত যতই সিমেন্ট কারখানা নির্মান করা হয়েছে সব সিমেন্ট থেকে ছাতক সিমেন্ট এখনো গুনে মানে নামেই সমাদৃত অবস্থান দখল করে রেখেছেন।এ উপজেলায় চালু করা হয় সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিল। দুর্নীতি অনিয়মের কারনে আজ বিলীন হয়ে গেছে এ প্রতিষ্টানটি।
বিশ্বের সুনামধন্য আরেকটি সিমেন্ট কারখানা বেসরকারী ভাবে সুরমা নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছিল। ২০০০ সালে বাংলাদেশে ও ভারত সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর তারাই বিশ্বের একমাত্র ত্রæসবর্ডার বানিজ্যিক প্রতিষ্টান,দুই দেশে অবস্থান করে।ভারতের মেঘালয় থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম ১৭ কিলোমিটার কনভেয়ার বেল্ডের মাধ্যমে চুনাপাথর চলে আসে সরাসরি ছাতকে নোয়ারাই এলাকায়। লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানায় এলাকার জনসাধারনের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে এখানকার মানুষের। সিমেন্ট উৎপাদনে পাশাপাশি স্থানীয় জনগনের জীবনযাত্রায় সম্পৃক্ত এই প্রতিষ্টানটি। কারখানার পাশেই তারা স্থাপন করেছেন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার। দুরবর্তী গ্রামগুলোতে চালু করা হয়েছে পাচটি সাব সেন্টার। এ সেন্টার গুলোতে শিশুরা ৫মশ্রেনী পযর্ন্ত পড়তে পাড়ছেন, বেকার মহিলারা সেলাই প্রশিক্ষন নিচ্ছেন,যুবকদের দেয়া হচ্ছে মোবাইল সাভির্স ’র প্রশিক্ষন, সবার জন্য চালু করেছেন চিকিৎসার সেবামুলক কাযত্রæম। বানিজ্যিক সম্প্রসারনের পাশাপাশি বিনিযোগ যদি হয় শিক্ষায় তবে তা অন্যাদের জন্য ও অনুকরনী হতে পারে। লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানা বাংলাদেশের নিমার্নশিল্পে ভুমিকা রাখার পাশাপাশি করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার সি এস আর অংশ হিসেবে শিশু শিক্ষায়ও ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। সুরমা নদীর তীরে গড়ে উঠা লাফাজের সুবিস্তুত কারখানায় শুধু বৈশ্বিক মান সম্পন্ন সিমেন্টই তৈরি পাশাপাশি আশপাশে গ্রাম গুলোর পৌছে দেয়া হচ্ছে শিক্ষার আলো। সুরমা নদীর তীরে ২০০ একর জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে বিশ্বের একমাত্র ত্রæসবর্ডার বানিজ্যিক প্রতিষ্টান লার্ফাজ সুরমা সিমেন্ট কারখানা। সিলেটে বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলাধীন নোয়ারাই গ্রামে স্থাপিত করা হয় ”বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্টানটি”। ২০০০ সালে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির মাধ্যমে এ প্রকল্পের আনুষ্টানিক যাত্রা শুরু করেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ২৮ কোটি ডলার বিনিযোগ করেছেন। লার্ফাজ যে শুধু ব্যবসাই করছে তা নয়। প্রতিষ্টা জন্ম লগ্নে থেকেই স্থানীয় জনগনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখছে। এ ক্ষেত্রে বেশী অগ্রাধিকার পেয়েছেন শিক্ষায়। ২০০৬ সালে উৎপাদনে এসে ও ২০০০ সাল থেকেই গ্রামে শিশুদের জন্য বিনা মুল্যে প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করেছেন এ প্রতিষ্টানটি। এলএসসি কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার স্কুলের মাধ্যমে এ কাযত্রæম অব্যাহত রেখেছে। প্রতিবছর ১৩০জন ছাত্র-ছাত্রীদের এই স্কুলে পড়াশোনা করছে। শুধু একটি স্কুল স্থাপন করেই বসে থাকেনি লাফার্জ,দুরবর্তী গ্রামের শিশুরা ও যাতে এই শিক্ষা গ্রহন করতে পারে সে জন্য পাচটি সাবসেন্টার ও খোলা হয়। স্কুলের শিক্ষাথীরা বিনা মুল্যে উপকরন ও স্কুল ড্রেস দেয়া হয়। ৫মশ্রেনীর পড়ে ও যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে সে লক্ষ্যে শিক্ষাথীদের বৃক্তি প্রদান করে যাচ্ছেন লাফার্জ।তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো শিশুদের শিক্ষায় আলো আলোকিত করা লক্ষ্যে লাফার্জ অন্যমত ভুমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বৃক্তি প্রদান প্রকল্পটি গোটা উপজেলায় অসহায় গরীবদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য লাফার্জ কতৃপক্ষ কাছে সবিনয় অনুরোধ করেছেন সচেতন মহল । এ প্রতিষ্টানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজার হাজার মানুষের জীবন জীবিকা জড়িত রয়েছেন। এছাড়া পুরাতন সিমেন্ট কারখানা চরম অনিয়ম দুর্নীতি কারনে ধব্বংশ দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে পুরাতন সিমেন্ট কারখানাটি।
এ শিল্পের সাথে ছাতকের কমলালেবু এবং স্বাদ,র মাছের বাজার ছিল বিস্তৃত। চেলার বা ছাতকের কমলার স্বাদ আকার ও রং ছিল অতুলনীয়। কালের প্রবাহে এখন নদ হাওড় ভরাট হয়ে যাওয়ার কারনে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। প্রবীনরা চেনার কমলালেবু স্মৃতি স্বাদ আজ আর নেই। মৌ মৌ গব্দে এখন হয়তো ছাতকের কমলা আমাদের রসনা তৃপ্ত করে না। নৌ বন্দরের সারি সারি বারকি নৌকা ভরা কমলালেবু মৌ মৌ সৌরভে একাকার হয়ে যেত বারকি নৌকা শ্রমিকরা । তখন চলাচলে একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌ পথ। ”পাল উড়াই ”বারকি নৌকার শ্রমিকরা মনে আনন্দে ভাটিয়ালী গান পবিবেশন করতো এখনকার মানুষ।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে ছাতকের ভুমিকা ছিল প্রশংসনীয়। থানা,ইউনিয়ন,গ্রাম পাড়া মহল্লায় সংগ্রাম পরিষদ গড়ে উঠেছিল। মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক আব্দুল হক, এমপি শামসুমিয়া চৌধুরী, আলহাজ্ব মদরিছ আলী চৌধুরী,বাবু হেমেন্দ্র দাশ পুরকারস্থ,ডাঃ হারিছ আলী, চেরাগ আলী,সাবেক মেম্বার বশির উদ্দিন ওরফে জুনাব আলী, চেরাগ আলী মাষ্টার, সহ নাম জানায় অনেকের নেতৃত্বে প্রতিদিনই প্রতিটি গ্রামে গঞ্জে মিছিল মিটিং চলছিল ও সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। আপাময় ছাত্র ,যুবক তরুন সমাজ উহুাল সমুদ্রের মতো জেগে উঠেছিল যে অগনিত কৃষক সমাজ। দীর্ঘ ৪৯ বছর পর তাদের অগ্রহনী অবদান কথা স্মৃতি বিজড়িত অগ্নিঝড়া দিন গুলো আজ যেন হারিয়ে গেছে । কোনো সভা মিটিংয়ে তাদের নাম ও স্মরন এখন কেউ উল্লেখ্য করছেন না । আব্দুল হক একজন দেশপ্রেমিক নিবেদীত প্রান পুরুষ’র নেতৃত্বে শ’শ’ যুবকরা সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছেন। তার নেতৃত্বে ৫নং চেলা সাব সেক্টর সৃষ্টি হয়। তার কবরটি আজ কোথায় রয়েছে ? এ প্রজন্মের যুবক জানেন! তার মৃত্যু কবে হয়েছেন আমরা তার কবর লইনা বলে দুঃখ প্রকাশ করেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার নামেই গোবিন্দগঞ্জবাসি আব্দুল হক স্মৃতি বিশ্ববিদ্যালয় নামকরন করা হলে ও তার কবরটি আজ দেশ-স্বাধীনতার ৪৯ টি বছর পেরিয়ে গেলে দেশপ্রেমিক আব্দুল হক কিভাবে মারা গেল তার রহস্য আজো রয়ে গেল অজানায়। দেশের জন্য প্রান দিল, দেশপ্রেমিক আব্দুল হক কবরটি রয়েছে চরম অযতেœ পড়ে আছে। কোথায় আছে,কি ভাবে আছে আমরা কি জানি।আমরা কখনো এসব খবর রাখা চেষ্টা কখন আমরা করেনি। গুনিজনকে আমরা সম্মান না করলে ও গুনি হতে পারবো না। গুনিজনকে স্মরন করার ক্ষুদ্র প্রয়াস। তার আতœজীবনী নিয়ে কোনধরনের লেখা বই তৈরির করার উদ্দ্যোগ নেয়া হয়নি।যত দিন এগিয়ে যাবে যতই এ সময় ছাতক সুফিবাদের রাজধানী হয়ে যাবার সম্ভাবনা বিদ্যামান আজই বলে অভিমত প্রকাশ করেন।
ঐতিহ্যবাহী আরাম দায়ক মাটির দালান আধুনিকতার ছোয়ায় এখন বিলুপ্তির পথে। মাটির দালান শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বলে পরিচিত লাভ করেন। শীত গরম উভয় মৌসুমে আরাম দায়ক মাটির ঘর কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে। তাইতো আরামের জন্য ছাতক-দোয়ারা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি বিত্তবানও মাটির দালান তৈরি করে এক সময় বসবাস করেছে।বর্তমানে দরিদ্র কিছু মানুষের বাড়িতে মাটির দালান আজ আর দেখা যায় না।
Leave a Reply