নিজ হাতে পোস্টার–ফেস্টুন নামালেন খেলাফত মজলিসের এমপি প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদির
ষ্টাফ রিপোটারঃ
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকল ধরনের নির্বাচনী পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার অপসারণের আহ্বান জানানো হয়। সেই নির্দেশনার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন সুনামগঞ্জ–৫ (ছাতক–দোয়ারাবাজার) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত সংসদ সদস্য (এমপি) পদপ্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদির।
শুক্রবার সকাল থেকে তিনি নিজেই মাঠে নেমে তার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার অপসারণ কার্যক্রমে অংশ নেন। কোনো কর্মী বা সমর্থকের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে না দিয়ে তিনি নিজ হাতে দেয়াল ঘড়ি প্রতীকসংবলিত প্রচার সামগ্রী খুলে ফেলেন। তার সঙ্গে এ সময় দলের কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত থাকলেও নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন তিনি নিজেই। একজন প্রার্থী হিসেবে তার এমন সরাসরি অংশগ্রহণ এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকা ও জনসমাগমপূর্ণ স্থানে লাগানো খেলাফত মজলিসের পোস্টার ও ব্যানার অপসারণ করা হয়। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই অধিকাংশ প্রচারণা সামগ্রী সরিয়ে ফেলা হয়, যাতে নির্বাচনী আচরণবিধির কোনো ধরনের লঙ্ঘন না ঘটে।
এ বিষয়ে হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদির বলেন, “নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি মানা শুধু আইনি বাধ্যবাধকতা নয়, এটি একজন প্রার্থীর নৈতিক দায়িত্বও। আমরা যদি নিজেরা আইন মানতে ব্যর্থ হই, তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে কীভাবে ন্যায়বিচার ও সুশাসনের কথা বলব? একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে আগে আমাদের নিজেদের শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন মানে শুধু ভোট চাওয়া নয়; নির্বাচন মানে দায়িত্বশীল আচরণ, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। এই ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে আমি সেটিই বোঝাতে চেয়েছি।” তার এই উদ্যোগে স্থানীয় ভোটার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া দেখা গেছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার এমন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করছেন। স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, “রাজনীতিতে আমরা প্রায়ই আইন ভাঙার সংস্কৃতি দেখি। কিন্তু একজন প্রার্থী নিজ হাতে পোস্টার খুলে ফেলছেন—এটা সত্যিই ব্যতিক্রম। এতে জনগণের আস্থা বাড়ে।” একজন কলেজশিক্ষার্থী বলেন, “নির্বাচনী আচরণবিধি শুধু কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবেও মানা দরকার। হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদির তা করে দেখিয়েছেন। অন্য প্রার্থীরাও যদি এমন সচেতন হন, তাহলে নির্বাচন আরও সুন্দর হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের আগে আচরণবিধি মানার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নির্বাচনী পরিবেশের ওপরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি নির্ভর করে। পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেলে যেমন পরিবেশ দূষণ হয়, তেমনি আইন অমান্যের একটি নেতিবাচক বার্তাও যায়। সেই জায়গায় একজন প্রার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। খেলাফত মজলিসের স্থানীয় নেতারা জানান, দলের পক্ষ থেকেও সব সময় আইন মেনে রাজনীতি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। দলের একজন নেতা বলেন, “আমাদের প্রার্থী শুধু কথা নয়, কাজের মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, ইসলামী রাজনীতি মানেই শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা।” উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী অপসারণ করা বাধ্যতামূলক। এ নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও বিধান রয়েছে। অতীতে দেখা গেছে, অনেক প্রার্থী বা দল এই নির্দেশনা মানতে গড়িমসি করে, যার ফলে প্রশাসনকে জোরপূর্বক অপসারণে যেতে হয়। এতে বাড়তি ব্যয় ও অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সে তুলনায় হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদিরের উদ্যোগ নির্বাচনী শৃঙ্খলা রক্ষায় একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি শুধু নিজের প্রচারণা সামগ্রী অপসারণই করেননি, বরং অন্য প্রার্থীদের প্রতিও আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা সবাই যদি দায়িত্বশীল হই, তাহলে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাজও সহজ হবে। জনগণও একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার পাবে। সব মিলিয়ে, সুনামগঞ্জ–৫ আসনে খেলাফত মজলিসের এমপি প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদিরের এই উদ্যোগ শুধু একটি নিয়ম পালন নয়, বরং নির্বাচনী রাজনীতিতে নৈতিকতা ও সচেতনতার একটি শক্ত বার্তা বহন করছে। তার এমন পদক্ষেপ আগামী দিনের নির্বাচনী সংস্কৃতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সচেতন
Leave a Reply