ছাতক শহীদ মিনারে বিতর্কিত স্লোগান, ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও থানা প্রশাসনের রহস্যজনক নিষ্ক্রিয়তা
ছাতক প্রতিনিধিঃ
মহান বিজয় দিবসের মতো একটি জাতীয় ও পবিত্র দিনে সুনামগঞ্জের ছাতক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংঘটিত একটি সংবেদনশীল ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে শুরু হওয়া শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ কর্মসূচির সময় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ছাতক থানা পুলিশের কোনো দৃশ্যমান আইনি পদক্ষেপ না থাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, থানা প্রশাসনের এই নীরবতা রহস্যজনক এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণেরই প্রতিফলন।
জানা যায়, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর অঙ্গ সংগঠন সহ ছাতক ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন পর্যায়ক্রমে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এই ধারাবাহিকতায় ছাতক সেলস অফিসার্স এসোসিয়েশন শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফেরার সময় স্থানীয় যুবলীগ নেতা সামিউল হক সানী ছবি তোলার কথা বলে একটি ভিডিও ধারণ করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ৩০ সেকেন্ড নীরবতা পালনের পর শেষ মুহূর্তে সামিউল হক সানী উচ্চস্বরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। পরবর্তীতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের একজন সাবেক নেতার এমন স্লোগানকে অনেকেই সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক আদর্শ প্রচারের একটি কৌশলগত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
শহীদ মিনারের মতো জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রকাশ্যে এমন কর্মকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরও ছাতক থানা প্রশাসনের নীরবতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে সারা দেশে যখন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও রাজনৈতিক সহিংসতা দমনে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’সহ কঠোর অভিযান চলছে, তখন ছাতকে এ ধরনের ঘটনার পর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পুলিশের নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। মাঠপর্যায়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এখনো রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হতে পারেনি বলে জানান স্থানীয়রা
অন্যদিকে, না জেনে এই বিতর্কের শিকার হওয়া ছাতক সেলস অফিসার্স এসোসিয়েশন-এর সদস্যদের মধ্যে চরম বিব্রতবোধ ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সরল বিশ্বাসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে আসা পেশাজীবী সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও ধারণের মাধ্যমে তাদের অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
এব্যাপারে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে আমাদের পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।##
Leave a Reply